জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক, চোরাচালান মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনীর অবদানের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক, চোরাচালান মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এ জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। শান্তিরক্ষা মিশনেও পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন… সব বাধা ডিঙিয়ে ৪১ সালের মধ্যে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
পুলিশ এখন জনগণের পুলিশ হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশ বাহিনীকে সব সময় ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতেন। আমাদের পুলিশ বাহিনী জাতির পিতার সেই ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে কাজ করবে এটাই আশা করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীকে বঙ্গবন্ধু আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কৌশল হাতে নিয়েছিলেন। পুলিশের জন্য নানা স্থাপনা নির্মাণ করেন। ১৯৭৪ সালে নারী পুলিশ নিয়োগ দেন। তিনি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে চেয়েছিলেন। করে যেতে পারেননি। পঁচাত্তরে তাঁকেসহ আমার পুরো পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। ’
আরও পড়ুন…পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি। আমার দেশে আসার পেছনেও অনেক বাধা ছিল। তবে জনগণের জন্য জনগণের ওপর ভরসা করে আমি ফিরে আসি। আসার পর আমাদের লক্ষ্য ছিল কীভাবে দেশকে গড়ে তুলবো। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় আজকের পুলিশ বাহিনীর থাকার জায়গা ছিল না। গ্রাউন্ড ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা এগুলো করে দিয়েছি। পুলিশের যা যা দরকার, তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। রেশন ভাতা, টিফিন ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ’
আরও পড়ুন…পুলিশ সপ্তাহ: দূতাবাসে পদায়নসহ যেসব দাবি তুলবে পুলিশ
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা পুলিশের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গড়ে দিই, যেন যেকোনো সময় পুলিশ সহায়তা পেতে পারে। ২০০০ সালে ট্রেনিংয়ের জন্য পুলিশ স্টাফ কলেজ করি। এটা এখন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে গড়ে তোলা হয়েছে। অনেক দেশ থেকে এখানে ট্রেনিং করতে আসে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে নির্বাচনে আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণ করি। এরপর পুলিশের উন্নয়নে আরও অনেক পদক্ষেপ নিই। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ ইত্যাদি ইউনিট গড়ে তুলি। রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা দুটি পুলিশ বাহিনী গঠন করে দিয়েছি। সাইবার অপরাধ দমনে প্রতিটি বিভাগীয় সদর দফতরে ল্যাব স্থাপন করবো। সাইবার অপরাধ দমনে কাজ করছে পুলিশ। ’
আরও পড়ুন… পুলিশ এখন জনবান্ধব: রাষ্ট্রপতি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন করা হয়েছে। রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার আনা হয়েছে। ’
মানুষকে আবারও খালি জায়গা ফেলে না রেখে খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে মন্দা চলছে। আমরা এই ধাক্কা থেকে দূরে নয়। তবে আমরা অর্থনীতির গতি চলমান রেখেছি। আমরা চাই, আমরা যেন মন্দর কবলে না পড়ি। এ জন্য যেখানে যতটুকু জায়গা খালি পড়ে থাকবে সেখানেই উৎপাদন করতে হবে। ’
জীবন বাজি রেখে পুলিশ বাহিনী মানুষের পাশে থাকে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসে পুলিশ বাহিনীর ২৯ জন সদস্য প্রাণ হারান। নির্দয়ভাবে জামায়াত-বিএনপি পুলিশের ওপর হামলা করেছে। হত্যা করেছে। হোলি আর্টিজান হামলার পরপরই পুলিশ অফিসাররা ছুটে গিয়েছিলেন। দুজন জীবনও দেন। ’
আরও পড়ুন…মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন, পুলিশ সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী